Thursday, March 17, 2016

গুগল এর কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন

গুগল এর কিছু গোপন তথ্য জেনে নিন

গুগল কিছু ফানি টিক্স



1)সার্চ এর জায়গায়  DO A BERREL ROLL  লিখুন এবং সার্চ করুন

2) GOOGLE GRAVITY>>>>LINK

3)GOOGLE AUTO SCARCH>>>>LINK

4)GOOGLE DOODLE GAME>>>>LINK
5)RAIMBO  GOOGLE SEE>>>>LINK


6)GOOGLE  FUNNY  SPLAYER>>>>LINK

7)GOOGLE  OO   ERASER>>>>LINK

 8)GOOGLE  FUNNY   SCARCH>>>>LINK


Wednesday, March 16, 2016

আজ ই ফেইসবুক থেকে আয় করুন

আজ ই ফেইসবুক থেকে আয় করুন
প্রথমে এই লিঙ্কে এ ক্লিক করে রেজিস্টার করুন click here
আর প্রতি ঘন্টায়  ফ্রি বিট কয়েন আয় করুন

Monday, March 14, 2016

চার্জার ছাড়া স্মার্টফোন চার্জ হবে, টেকনোলজির হাড়ির খবর

চার্জার ছাড়া স্মার্টফোন  চার্জ হবে।   টেকনোলজির হাড়ির খবর




স্মার্টফোন যেমন হাতের মুঠোয় গোটা বিশ্বকে নিমেষের মধ্যে এনে দেয়। ঠিক তেমনই খানিক বাদেই ফোনের চার্জও নিমেষের মধ্যে ফোন থেকে হাওয়া। তার উপর গেমস খেলার নেশা থাকলে তো কথাই নেই। ফোনের সঙ্গে সঙ্গে চার্জরও সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে। কখন কোথায় চার্জ শেষ হয়ে আপনার স্মার্টফোন চূড়ান্ত আনস্মার্ট হয়ে যায় কিছুই বলা যায় না। এবার সে সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে। গেমস খেলে ফোন রাখার পর দেখবেন নিজে থেকেই চার্জ আবার ফিরে আসছে। ম্যাজিক নয়, খাঁটি বিজ্ঞান। সম্প্রতি একদল মার্কিন বৈজ্ঞানিক এমন এক প্রযুক্তি আবিস্কার করেছেন, যা রেডিও ফ্রিকুয়েন্সিকে বিদ্যুতে পরিনত করেছে ফলে এমন সমস্ত ডিভাইস যা রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ধরতে পারে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা সবই চার্জ করা সম্ভব হবে। টেক ক্রাঞ্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তিটি একটি কেস বা কভারের মতো। যেটা ফোনের সিগনাল খুঁজতে খরচ হওয়া ৯০ শতাংশ চার্জ পুনরায় আপনার মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। যার ফলে মোবাইল আপনা আপনি চার্জ হতে পারে।
আমেরিকার নিকোলা ল্যাবস এবং ওহাইও স্টেট ইনিভার্সিটির যৌথ উদ্যেগে আগামী এক বছরের মধ্যেই এই প্রযুক্তি বাজারে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু মোবাইলের ক্ষেত্রেই নয়, এই প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে এম্বেডেড সেন্সর এবং বিভিন্ন মেডিক্যাল যন্ত্রপাতিও চার্জ করার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আপনার ফোনে কি স্লো হয়ে গেছে , এক মিনিটে ফার্স্ট করে নিন নতুন এর মত স্পিড

আপনার ফোনে কি স্লো হয়ে গেছে , এক মিনিটে ফার্স্ট করে নিন নতুন এর মত স্পিড


নাম : Speed Boster Pro
লাইসেন্স : প্রো
প্ল্যাটফর্ম : অ্যান্ড্রয়েড
রেটিং :৪.৫


আপনার ফোন কে দিন নতুন এর মত স্পিড Speed Boster Pro এটি ৭ ইন ১ মিক্স এপ। আপনি ক্লোনিং,অপটিমাইজ,আনইনস্টল সহ আরো অনেক কিছু করতে পারবেন।এটি মেমরী ফ্রি করে আপনার অ্যান্ড্রয়েড এর স্পিড ৮০% পর্যন্ত বাড়ায়। এটি আপনার ফোনের ক্যাচ ডিলিট করে ফোনের স্টোরেজ বাড়ায়। প্রটেক্ট করে আপনার প্রাইভেসী। ফোন লেগিং করে না আর সিপিইউ পাওয়ার কম খরচ করে ফোন কে আরো স্পীডি করে তুলে।

-মেমরী ক্লিনার
-গেইম স্পিড বুস্টার
-ক্যাচ ক্লিন
-সার্চ হিস্ট্রি
-সার্চ হিস্ট্রি ক্লিন
-কল এবং হিস্ট্রি ক্লিনার
-ওয়ান ক্লিক আনইনস্টল
-মাল্টি লাঙ্গুয়েজ

ডাউনলোড করুন এখানে 


অল্টারনেটিভ লিংক 

মানব মস্তিস্ক ও কম্পিউটারের পারস্পরিক সমন্বয় :: শুধুই কল্পবিজ্ঞান ?

মনে পড়ে স্পাইডারম্যান সিনেমার সেই রোমাঞ্চকর দৃশ্য; যেখানে ডক্টর অক্টোপাস নিজের শরীরের সাথে সংযুক্ত ৪ টা "হাতের" সাহায্যে স্পাইডারম্যানের সাথে মারামারি করতে করতে উঠে যাচ্ছে অট্টালিকার দেয়াল বেয়ে ? কিংবা সেই ৪ টা যান্ত্রিক হাতকে একসাথে চালনা করে দ্রুত সম্পন্ন করছে জটিল যন্ত্রাংশ জোড়া লাগানোর কাজ | তার ভাবনার সাথে সাড়া দিয়ে ওই কৃত্রিম হাতগুলো কিলবিল করে নানারকম কাজ সম্পন্ন করে যাচ্ছে |

surrogate সিনেমার হিউম্যানয়েড রোবট | এরাই আসল মানুষের হয়ে সমস্ত কাজকর্ম করত এই সিনেমাতে |

এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনে যেভাবে ইলেকট্রিক সিগনাল যায়
কিংবা surrogate সিনেমার কথা ? যেখানে আসল মানুষ শুয়ে থাকে যান্ত্রিক ক্যাপসুলের মধ্যে; তার বদলে চলে ফিরে বেড়াচ্ছে হুবহু মানুষের মতই দেখতে কৃত্রিম মানুষ | আসল মানুষ সেই ক্যাপসুলে শুয়ে শুয়েই নিঁখুতভাবে চালনা করছে সেই যান্ত্রিক মানুষদের | সেই যান্ত্রিক মানুষরা যেখানে যাচ্ছে, যা করছে, যা শুনছে সব বুঝতে পারছে,শুনতে পারছে,দেখতে পারছে সেই ক্যাপসুলে শুয়ে থাকা আসল মানুষরা | সমস্ত পৃথিবীতেই তখন আর আসল মানুষরা আর কোনো কাজ না করে ঐভাবে surrogate দের সাহায্যে পৃথিবী চালায় | আর ভয়ংকর বিপদ নেমে আসে মানব প্রজাতির ওপর | সেটা অবশ্য আলাদা প্রসঙ্গ  |
এই ধরনের আরো অনেক সিনেমা রয়েছে | কিন্তু এই সব সিনেমারই যে ধারণার উপর ভর করে অগ্রসর হয়েছে সেটা হলো মানুষের মস্তিস্কের সাথে যান্ত্রিক কম্পিউটারের যোগাযোগ বা সমন্বয় সাধন | অর্থাৎ, মানুষ যা যা ভাববে, সেই ভাবনাগুলো সিগনাল হিসাবে নেবে কম্পিউটার আর সেই নির্দেশাবলী অনুসারে চালাবে কোনো কৃত্রিম যান্ত্রিক system | মানুষ সেই সিস্টেমটা কে যেভাবে চালাতে চাইবে ঠিক সেভাবেই চলবে সেটা | তার জন্য মানুষটা কে নড়াচড়া করতে বা কথা বলতে হবেনা | শুধু ভাবলেই হবে মনে মনে |
এই ধারণার পেছনে আছে খুব সাধারণ একটা মূলনীতি | মানুষের মস্তিস্কের কার্যপ্রণালীও তড়িত-চুম্বকীয় সিগনালের ওপর নির্ভরশীল আর কম্পিউটারেকেও চালনা করে সেই তড়িত-চুম্বকীয় সিগনাল | অবশ্য নিখুঁত ভাবে বলতে গেলে মানুষের মস্তিস্কে তড়িত-রাসায়নিক প্রভাবও আছে |
মানুষের মস্তিস্কের গঠনগত একক হলো নিউরন  | এক নিউরন থেকে আরেক নিউরনে তড়িত তরঙ্গ প্রবাহিত হয়ে মস্তিস্ককে চালনা করে | যেকোনো মানবিক অনুভূতিই ধরা যাকনা কেন, সেটা আসলে মস্তিস্কের ভেতরের ইলেকট্রিক সিগনালের প্রবাহের ফলেই ঘটে থাকে |

কোন একটা নিউরনের নিজের ভেতর দিয়ে যেভাবে সিগনাল যায়
এবার কল্পবিজ্ঞানের ধারনাতে যদি এই প্রবাহকে কম্পিউটারের ইনপুট হিসাবে দেয়া যায় তাহলে ওই কম্পিউটার ওই ইনপুট সিগনালের সাহায্যে কোনো রোবটিক সিস্টেমকে চালাতে সক্ষম | আবার একইভাবে উল্টোটাও সম্ভব | অর্থাৎ, ধরা যাক আমরা যখন কিছু দেখি তখন কি ঘটে | আমাদের চোখের ভেতর দিয়ে আলো প্রবেশ করে সেই আলো রেটিনাতে পড়ে | রেটিনার পেছনের আলোকসংবেদী স্নায়ুকোষ সেই আলোকসম্পাতকে ইলেকট্রিক সিগনালে পরিনত করে পাঠায় মাথার ভেতরে | নিউরন থেকে নিউরনে সেই সিগনাল প্রবাহিত হয়ে মস্তিস্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলে গিয়ে পৌছায় আর তার ফলে সৃষ্টি হয় দর্শনের অনুভূতি | এবার কোনো ক্যামেরা থেকে পাওয়া আলো যদি কম্পিটারের সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগনালে পরিনত করে কোনভাবে সেই তরঙ্গ পৌছানো যায় কোনো অন্ধ মানুষের মস্তিষ্কের সেই বিশেষ অঞ্চলে, তাহলে অনায়াসেই সেই মানুষটি চোখ না থাকা সত্বেও দেখতে পাবে বাইরের পৃথিবী |

কতটা বাস্তবতা আছে এই ধারণার পেছনে ? কতটা বিজ্ঞানভিত্তিক এই কাল্পনিক ভবিষ্যতের ধারণা ? দেখা যাক |
খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই কৌতুহলুদ্দীপক ধারণা নিয়ে পৃথিবীর গবেষনাগারে জোরেশোরে কাজ চলছে | মানুষের মস্তিষ্কের সাথে কম্পিউটারের এই সমন্বয়কে বলা হচ্ছে Brain - Computer Interface বা সংক্ষেপে BCI (এর সঠিক বাংলা করা এই মুহুর্তে সম্ভব নয় বলে এই লেখার পরবর্তী অংশে এটাকে BCI বলেই লেখা হবে) | দেখা যাক এই BCI কতটা সম্ভাবনাপূর্ণ, এর সীমাবদ্ধতাই বা কোথায়, কতটা প্রভাব ফেলতে পারে এটা মানবজীবনে |

বিজ্ঞানী Hans Berger

বিজ্ঞানী Hans Berger দ্বারা রেকর্ডকৃত প্রথম EEG
সত্যিকারের Brain - Computer Interface নিয়ে কাজ শুরু হয় ১৯৭০ এর দিকে University of California Los Angeles এ | কিন্তু এর সূত্রপাত হয়ে গেছিল ১৯২৪ সালে, যখন বিজ্ঞানী Hans Berger আবিষ্কার করেন মানব মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে বৈদ্যুতিক তরঙ্গের কার্যকলাপ | তিনিই সেই তড়িত সংকেত মাপা বা সনাক্ত করার জন্য EEG (electroencephalography) অর্থাৎ "ইলেক্ট্রো-এনসেফালো-গ্রাফি" উদ্ভাবন করেন | যদিও তার যন্ত্র অনেক কাঁচা ছিল কিন্তু সেই যন্ত্রের সাহায্যেই তিনিই প্রথম মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ রেকর্ড করেন |

আদিযুগের electrode | ফিতা দিয়ে বাঁধা থাকত চিবুকের সাথে |

প্রথম দিকের commercial EEG মেশিন

খুলির নিচে কিভাবে ইলেক্ট্রোড বসানো থাকতে পারে তার রেখাচিত্র

একটু ব্যাপক ভাবে বলতে গেলে BCI আসলে Neuroprosthetics (নিউরো-প্রস্থেটিকস) এর অন্তর্গত | Neuroprosthetics এ মানুষের ক্ষতিগ্রস্থ বা বিনষ্ট স্নায়ু/স্নায়ুতন্ত্রের বদলে কৃত্রিম স্নায়ু ব্যবহার করে বিভিন্ন সংবেদী অঙ্গকে মেরামত করা | পার্থক্য হলো, Neuroprosthetics এ শরীরের যেকোনো স্থানের স্নায়ু নিয়ে কাজ করা হয় আর BCI শুধু মস্তিষ্কের তরঙ্গ নিয়েই কাজ করে | কিন্তু বর্তমানে BCI গবেষণা এতটাই বিস্তার লাভ করেছে যে এই শব্দ দুটো একই অর্থবহ হয়ে উঠেছে |
আগেই বলা হয়েছে এই BCI  এর ধারণা এসেছে মানব মস্তিষ্কের মূল কার্যনীতি থেকে | মস্তিস্ক অসংখ্য নিউরনের সমন্বয়ে গঠিত | আর প্রতিটি নিউরন পরস্পরের সাথে সংযুক্ত Axon আর Dendrites দ্বারা | যখনই আমরা কিছু অনুভূতি পাই বা কোনো নড়াচড়া করি বা কিছু মুখস্থ করি; আমাদের নিউরনগুলো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে | ওই বিভিন্ন কাজের অনুভূতিগুলো ছোট ছোট ইলেকট্রিক সিগনাল হিসাবে প্রবাহিত হতে শুরু করে নিউরন থেকে নিউরনে; ঘন্টায় প্রায় ২৫০ মাইল গতিতে ! প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে, যেকোনো তড়িত সংবহন তন্ত্রের মতই কাজ করে এই নিউরন গুলো | একেকটা নিউরনে আলাদা আলাদা তড়িত বিভব থাকে, আর এই বিভব পার্থক্যের ফলেই এই নিউরন থেকে আরেক নিউরনে তড়িত সংবহন হয় |
ফেরা যাক মূল প্রসঙ্গে | তড়িত প্রবাহের সময় তড়িত ক্ষরণের হাত থেকে রক্ষার জন্য এই নিউরন গুলো কারেন্টের তারের মতই কুপরিবাহী একধরনের পাতলা চাদর দ্বারা আবৃত থাকে; যাকে বলা হয় Myelin Seath | কিন্তু সুরক্ষা আবরণী দিয়ে আবৃত থাকা সত্বেও কিছু কিছু তড়িত প্রবাহ ক্ষরিত হয়ে যায়ই | বিজ্ঞানীরা একে বলেন "escaped electric signal" | বিজ্ঞানীরা এই ক্ষরিত প্রবাহ বিশ্লেষণ করে বের করেন এরা মস্তিস্কের যে অঞ্চল থেকে আসছে সেটা কিভাবে এই প্রবাহের সাথে সম্পর্কিত | এবং এই সম্পর্কের সাহায্যেই BCI এর ধারণা বাস্তব করা সম্ভব বলে মনে করা হয় |

মস্তিষ্কের সিগনাল ধরার জন্য খুলির বাইরে মাথার ওপর বসানো আধুনিক ইলেক্ট্রোডের জাল |

BCI এর সবচেয়ে বড় সমস্যা এটি নিজেই | অর্থাৎ, মানুষের মস্তিস্ক থেকে ক্ষরিত ইলেকট্রিক সিগনাল ধরা হবে কি করে ? এর আপাতত সবচেয়ে সোজা সমাধান হলো EEG (electroencephalography) | এখানে বিশেষ ধরনের তড়িত গ্রাহক বর্তনী বা electrode ব্যবহার করা হয় | এই গ্রাহকগুলো মাথার খুলির সাথে আটকানো থাকবে আর ভেতরের ইলেকট্রিক সিগনাল ধরার চেষ্টা করবে | যেহেতু মানুষের শক্ত পুরু খুলির ভেতর থেকে ওই ক্ষীন প্রবাহ ধরতে পারা খুবই কঠিন তাই ওই electrode গুলোকে হতে হবে ভীষণ সংবেদী |
এছাড়াও যদি EEG electrode গুলোকে সরাসরি মস্তিষ্কের gray matter এর মধ্যে প্রতিস্হাপন করা যায় কিংবা EEG electrode গুলোকে খুলির ভেতরের দিকে মস্তিষ্কের সংস্পর্শে স্থাপন করা হলেও অনেক জোরালো সিগনাল পাওয়া সম্ভব | অবশ্যম্ভাবীভাবেই এই পদ্ধতির অনেক ঝামেলা আছে | এর জন্য মস্তিস্কের সার্জারী হতে হবে অত্যন্ত উন্নত | electrode র মান হতে হবে অন্যরকম যাতে ওটা জীবন্ত স্নায়ুর সংস্পর্শে এসে নিজেকে বা ওই স্নায়ুকোষকে নষ্ট না করে ফেলে |
এই সমস্যা ধরা না হলে বাকি নীতিটা  খুব সরল | ওই electrode গুলো নিউরনের সুক্ষ্ম বিভব পার্থক্য ধরবে, সেটাকে বর্ধিত (amplify) করবে, কম্পিউটার ইনপুট এর জন্য তৈরী করবে আর নির্দিষ্ট সিস্টেমে পাঠিয়ে দেবে | অথবা উল্টো দিক থেকে হলে বাইরের সিস্টেম থেকে পাওয়া ইলেকট্রিক সিগনালকে নিউরনের জন্য তৈরী করে পাঠিয়ে দেবে মস্তিস্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলে |
BCI গবেষনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে সেটা হলো, এমন একটা যন্ত্র বের করা যেটা মানুষের ভাবনার মাধ্যমে চলবে | হয়ত কোনো ভিডিও গেম বের করা যেটা ভেবে ভেবে খেলা যাবে বা টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলার যেটা দিয়ে ভেবে ভেবে টিভি বন্ধ করা যাবে, "আওয়াজ বাড়ুক" ভাবলেই টিভির শব্দ বেড়ে যাবে !!

BCI সিস্টেমের সাহায্যে কিভাবে পঙ্গু মানুষের হাত কাজ করতে পারে তার রেখাচিত্র |

আরো বৃহত্তর ক্ষেত্রে এটার আরো দারুন দারুন সম্ভাবনা রয়েছে | ধরা যাক কোনো মানুষের কনুই এর কাছের কোনো নার্ভ নষ্ট হয়ে যাওয়াতে তার মস্তিস্ক থেকে আসা ইলেক্ট্রনিক আদেশ হাতের বাকি অংশে যেতে পারছেনা, ফলে মানুষটা হাতটা নড়াচড়া করতে পারছেনা | এবার যদি তার কনুই এর কাছে BCI নিয়ন্ত্রিত electrode বসিয়ে দেয়া হয় যেটা নষ্ট স্নায়ুর জায়গাতে বসে দুপাশের সুস্থ্য স্নায়ুর সাথে সংযোগ সাধন করবে; তাহলে মানুষটা এবার যখন ভাববে যে হাত নাড়াতে হবে , তখন সেই সিগনাল মস্তিস্ক থেকে এসে আগের মতো আর কনুই এর কাছে থেমে না থেকে হাতের বাকি অংশে সঞ্চালিত হবে; আর মানুষটা অনায়াসে হাত নাড়াতে পারবে |
কিংবা ধরা যাক ওই মানুষটার কনুই এর কাছে থেকে কাটা পড়ে গেছে দুর্ঘটনার ফলে | এবার ওই কনুই এর সাথে একটা BCI নিয়ন্ত্রিত robotic arm লাগিয়ে দেয়া হলো | এবার মানুষটা যখন হাত টা নাড়াতে চাইবে, তখন সেই সিগনাল এসে পৌছাবে রোবটিক অংশের BCI র কাছে |  BCI এর software জানে এই সিগনালটা হাত নাড়ানোর সিগনাল | সেটা তখন অনায়াসে রোবটিক আর্ম টা কে নাড়াতে শুরু করবে (terminator সিনেমার কথা মনে পড়ছে ??) | ব্যাপারটা শুনতে সরল মনে হলেও এর পেছনে অনেক জটিল ঘটনা রয়ে যাচ্ছে | সব মানুষের হাত নাড়ানোর সিগনালের প্রাবল্য সমান নয় | এক্ষেত্রে ওই BCI র মধ্যে কিছুটা হলেও self teaching algorithm থাকতে হবে |

এবার প্রশ্ন জাগতেই পারে যে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব হয়েছে কি না পরীক্ষাগারে |

বিড়ালের থ্যালামাস থেকে প্রাপ্ত সিগনালকে পুনরুদ্ধার করে পাওয়া ছবি | ওপরের সারি হলো প্রকৃত ছবি; যেগুলো বেড়ালকে দেখানো হয়েছিল | আর নিচের সারি হলো সিগনাল পুনরুদ্ধার করে প্রাপ্ত ছবি |
১৯৯৯ সালে, University of California, Berkeley র গবেষকদল বেড়ালের মস্তিষ্কের থ্যালামাসে (মস্তিষ্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি মস্তিষ্কে আগত সমস্ত ধরনের সিগনালকে সমন্বয় করে) EEG electrode বসিয়ে তার থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে বিড়াল যা দেখছিল সেটাকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করেন | ছবিতে বোঝা যাচ্ছে তাদের সফলতার পরিমান |

Duke University র পরীক্ষায় বাঁদরের ভাবনার সাহায্যে robotic arm চালনা করে হচ্ছে |
২০০০ সালে Duke University, Durham, North Carolina র অধ্যাপক Miguel Nicolelis একটা পরীক্ষা চালান বিশেষ এক প্রজাতির বাঁদরদের নিয়ে | পরীক্ষাধীন এই বাঁদরদের দিয়ে একটা joystick controlled robotic arm চালানো হয় | অর্থাৎ, প্রথমে বাঁদরদের হাতে দেয়া হয় একটা জয়স্টিক | বাঁদররা সেটা নাড়ালে সেটার সাথে সংযুক্ত একটা robotic arm সেই সংকেতে সাড়া দেয় | পরীক্ষার পরের ধাপে এরপর বাঁদরের হাতে জয়স্টিকটা থাকে ঠিকই কিন্তু সেটার সাথে আর robotic arm টার কোনো যোগাযোগ থাকেনা | তার বদলে ওই robotic arm এর সাথে সংযোগ সাধন করানো হয় বাঁদরের মাথায় লাগানো electrode এর সাথে | এবার বাঁদর যখন জয়স্টিক নাড়াচ্ছে তখন তার মাথার ভেতরে এটার জন্য সংকেত তৈরী হচ্ছে; সেই সংকেতটা গ্রহণ করছে বাঁদরের মাথায় লাগানো EEG electrode আর চালনা করছে robotic arm টা কে |

Duke University র "বাঁদুরে পরীক্ষার" logic diagram |
এই ধরনের পরীক্ষা মানুষকে নিয়েও চালানো হয়েছে | যেখানে BCI সংযুক্ত করে মানব মস্তিস্ক আর একটা কম্পিউটার মনিটরকে | মানুষ ভেবে ভেবে কম্পিউটার স্ক্রীন এর cursor টা কে ডানে, বাঁয়ে, ওপরে. নিচে সরাতে সক্ষম হয় | এবং অনেক চেষ্টার পর একটা মোটামুটি বৃত্ত আঁকতেও সক্ষম হয় | শীঘ্রই হয়ত  আমরা দেখতে পাব নতুন android application ; যেটা ব্যবহার করে কেউ ভেবে ভেবেই sms লিখে ফেলবে |

BCI system ব্যবহার করে কিভাবে মানুষ শুধু ভেবে ভেবে screen এর ওপরের cursor এর অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে; তার চিত্র |

Germany তে এক পরীক্ষায় দুজন মানুষ BCI সিস্টেম ব্যবহার করে ভেবে ভেবে "how are you" কথাটা কম্পিউটার স্ক্রিনে লেখার চেষ্টা করছে |

auditory BCI | কানের বাইরে বসানো receiver দিয়ে শব্দ গ্রহণ করে, সেটাকে কানের ভেতরের খারাপ অংশকে bypass করে সরাসরি পৌছানো হয় ককলিয়ার ভেতরে বসানো ইলেক্ট্রোড গুলোতে | তারপর সেই সংকেত সরাসরি পৌছায় auditory nerve এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের শ্রবণ কেন্দ্রে | ফলে রোগী তার শ্রবণ শক্তি ফিরে পায় |

BCI গবেষনার সবচেয়ে সহজ এবং বহুলপ্রচলিত প্রমান হলো Cochlear Implant (ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট)  |
মানুষের কানে যখন কোনো শব্দ ঢোকে তখন সেই শব্দ তরঙ্গ কানের ভেতরে অনেক ছোট ছোট প্রত্যঙ্গের মধ্যে দিয়ে গিয়ে Cochlea নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সাহায্যে প্রবেশ করে auditory nerve (শ্রবণ স্নায়ু) এ | কোনো কারণে হয়ত দেখা যায় কোনো মানুষের কানের কোনো বিশেষ অংশ নষ্ট হয়ে গেছে অথচ শ্রবণ স্নায়ু  ঠিক আছে | যার ফলে শ্রবণ স্নায়ু সিগনাল পায়না বলে মানুষটা শুনতে পায়না | ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট এ ওই নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশকে bypass করা হয় BCI এর সাহায্যে | বাইরের থেকে আসা শব্দের সংকেত খারাপ অংশকে এড়িয়ে পৌঁছে যায় auditory  nerve এ | মানুষটি শ্রবণ ক্ষমতা ফিরে পায় |
ডিসেম্বর ২০১০ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে বিশ্ব জুড়ে এই ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করছেন ২২০০০০ জন মানুষ

অন্ধ মানুষের ক্ষেত্রে ঘটনাটা আরেকটু কঠিন হয়ে দাড়ায় | মানুষের "দর্শন" ব্যাপারটা শ্রবনের থেকে অনেক বেশি জটিল প্রক্রিয়া | কৃত্রিম চোখ এখনো মানুষের আসল চোখের ধারেকাছেও আসতে পারেনি | তাই এক্ষেত্রে BCI  অনেকটাই অসহায় | তবে পরীক্ষা সফল নয় এটা মোটেও বলা যাবেনা | হয়ত নিঁখুত নয়, কিন্তু visual BCI সক্ষম হয়েছে অন্ধ মানুষকে বাইরের জগত দেখাতে |

গত শতকের ৭০ এর দশকে করা ভিসুয়াল BCI পরীক্ষা | বিশাল আকারের mainframe computer পরিচালিত এই BCI সিস্টেমের সাহায্যেই প্রথম কৃত্রিমভাবে অন্ধ মানুষের মস্তিষ্কের ভেতরে phosphenes এর অনুভূতি সৃষ্টি করা হয় |
এই পরীক্ষা প্রথম করা হয় ১৯৭৮ সালের দিকে | কৃত্রিম চোখ হিসাবে এখানে ব্যবহার করা করা হয় চশমা বা সানগ্লাসের ওপর বসানো খুদে ক্যামেরা | আর পুরো ব্যাপারটা পরিচালনা করে visual BCI |
Jerry নামে এক ব্যক্তি বড় হওয়ার পর অন্ধ হয়ে যান | তার অপটিক নার্ভ গুলো অবশ্য ঠিকই ছিল | বিজ্ঞানী William Dobelle আর তার দল জেরির মাথাতে একটা single array BCI বসান যাতে ৬৮ টা EEG ছিল |  আর একটা বিশাল আকারের ২ টন ওজনের একটা mainframe computer ব্যবহার করে জেরির মস্তিষ্কে "আলো ছাড়া আলো দেখার অনুভূতি" জাগাতে সক্ষম হন যেটাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় phosphenes |
আমরা প্রায় সবাই কখনো না কখনো এই phosphenes দেখেছি | আশ্চর্য লাগছে ? মাথায় চোট লেগে গেলে অনেক সময় চোখের সামনে সাদা সাদা ফুটকি নাচতে দেখেনি আমরা ? অথবা চোখ বন্ধ অবস্থাতে জোরে জোরে চোখ চুলকানোর পর বা কোনো কারণে চোখের ওপর জোরে চাপ লাগার ফলে আমরা দেখিনি যে অন্ধকারে সাদা সাদা ফুটকি চমকে চমকে উঠছে ? এটাই সেই phosphenes
William Dobelle এর  দল অবশ্য পরে এই vision  system কে বহনযোগ্য করে দেন | এটার সাহায্যে আসলে jerry বিভিন্ন বস্তুর বিভিন্ন অবস্থানে ওই ফুটকি দেখতে পান | অনেক প্র্যাকটিসের পর ওই ফুটকির অবস্থান থেকে ওটা আসলে কি বস্তু সেটা নির্ধারণ করতে শেখেন তিনি |
২০০১ সালে এই ভিশন সিস্টেম ব্যবহার করে jerry একটা ঘরের মধ্যে একটা দেয়ালে টাঙানো টুপি সনাক্ত করে, হেঁটে গিয়ে সেটাকে নামাতে সক্ষম হন এবং অন্যদিকে থাকা একটা মানুষ-পুতুলের (mannequin) অবস্থান সনাক্ত করে সেটার মাথায় টুপিটা পরিয়ে দিতেও সক্ষম হন | এর জন্য তার নাম Guinness Book of Records এও ওঠে |

শরীরের সাথে ঝোলানো portable visual BCI system সহ জেরি |

জেরির শরীরে বসানো ভিসুয়াল BCI সিস্টেমের রেখাচিত্র |
তারপরে প্রকৌশলের উন্নতির সাথে সাথে পরীক্ষাধীন অন্ধ মানুষের "বহির্জগত" অনেক পরিষ্কার হয়েছে |
এই পরীক্ষার ভলান্টিয়ারদের 2nd generation এর একজন হলেন New York এর বাসিন্দা Jens Naumann  | অবশ্য এই ভলান্টিয়াররা paid ,  অর্থাৎ তাদের নিজেদের ব্যয় বহন করতে হয় নিজেদের ওপর পরীক্ষা চালাতে দেয়ার জন্য | এদের ১৬ জনের দলে মধ্যে তিনি প্রথম সফল 'গিনিপিগ' | তাদের সময়ে ব্যবহৃত BCI এর মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কে phosphenes টা আরো পরিষ্কার হয়ে উঠলো | তারা যেটা দেখতে পেলেন সেটাকে বিজ্ঞানীরা বলেন "The Starry-night effect" | তার মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রপচারের পরই তিনি research institute এর parking lot এ ধীরে ধীরে হলেও গাড়ি চালাতে সক্ষম হন |

টেলিভিশনের সামনে Jens Naumann | এই সিস্টেম নিজের শরীরে বসানোর জন্য সব মিলিয়ে (যন্ত্রপাতি, হাসপাতাল, যাতায়াত) তার খরচ হয় মোটামুটি $115000!!!

সফল অস্ত্রপচারের পরেই Jens Naumann গাড়ি চালাচ্ছেন হাসপাতালের বাইরের parking lot এ |
তিনি এই ব্যবস্থার সাহায্যে এখন New York এর subway তেও ঘুরে বেড়াতে পারেন ! যদি কল্পবিজ্ঞানের বাস্তবতার কথা জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে এর থেকে বড় উদাহরণ আর কি হতে পারে !!?

Jens Naumann তার ছেলের সাথে Dobelle institute এর বাইরে |
মজার ব্যাপার হলো, "Star trek : The Next Generation" সিনেমা/সিরিয়ালে অন্ধ ইঞ্জিনিয়ার অফিসার Geordi La Forge যে ধরনের কাল্পনিক চশমা পরেছিলেন, বর্তমানের Jens Naumann  এর ব্যবহার করা BCI visual  system এর সাথে এর ভীষণ মিল রয়েছে !! এর কারণ অবশ্য এটা বোধহয় যে, ঐরকমের অনুষ্ঠানের নির্মাতারা বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলেই ঐসব design করে থাকেন |

Star Trek এর অন্ধ ইঞ্জিনিয়ার Geordi La Forge | তার চোখে বসানো কল্পবিজ্ঞানের অতি উন্নত BCI visual system এর চশমা |

BCI সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য জানার আগে একটু জেনে নেয়া যাক যে এর সামনে কঠিন বাধা গুলো কি কি :
১. এখন BCI গবেষনার প্রস্তরযুগ চলছে বলা যায় | এখন এটুকুই ধরে নেয়া হয় যে, "মস্তিস্কে ঘটিত সমস্ত প্রক্রিয়া আসলে ইলেকট্রিক সিগনাল মাত্র" | প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরনের সমন্বয়ে তৈরী যে মস্তিষ্কের ভেতরে নিরন্তর বিদ্যুত, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, নানারকমের অনুঘটকের অসাধারণ লীলাখেলা চলছে; বিস্ময়কর রকমের জটিল network এর এই মস্তিস্ক সম্পর্কে উপরোক্ত ধারণা নেহাতই মোটা দাগের | কিন্তু পরীক্ষার স্বার্থে এইরকম সরলীকরণের প্রয়োজন আছে বৈকি | মস্তিষ্কের কাজ পুন্খানুপুন্খ ভাবে না বোঝা পর্যন্ত BCI system সম্পূর্ণ হবেনা | আর সেই দিন এখনো অনেক দেরী |
২. electrode গুলো এখনো খুব জোরালোভাবে মস্তিষ্কের সিগনাল গ্রহণ করতে সক্ষম নয় | অনেক রকমের বাধারুপী সিগনাল মূল সিগনালকে নষ্ট করে দিতে পারে | যেমন EEG যখন হাতের নড়াচড়ার সিগনাল গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তখন ভলান্টিয়ার যদি চোখ পিটপিট করে (করবেই) তাহলে এটার কারণে উদ্ভূত সিগনাল, মূল সিগনালকে distorted করে দেবে | BCI এখনো তৈরী নয় এই পার্থক্য ধরার জন্য | হয়ত সময়ের সাথে সাথে, কারিগরির উন্নতির সাথে সাথে আরো নিখুঁত হবে এই ব্যবস্থা; কিন্তু এখনো পর্যন্ত BCI দ্বারা ব্রেন সিগনাল গ্রহনের ব্যাপারটা ঝড় বৃষ্টির সময়ে ফোনে কথা বলার মতই অস্পষ্ট |
৩. এরপর আসছে যন্ত্রপাতির সীমাবদ্ধতা | এখন তাও অনেক ভালো | সেই শুরুর দিকে EEG electrode গুলো যে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকত সেগুলো বিশাল বিশাল আকারের, ঘর জোড়া mainframe computer | এখন হয়ত কম্পিউটার অনেকই ছোট হয়েছে, হয়েছে wireless ; কিন্তু এখনো ব্যবহারকারীকে যে কম্পিউটার বয়ে বেড়াতে হয় টার ওজন কমবেশি ১০ পাউন্ড | সময়ের সাথে সাথে তাল মেলানো ছাড়া কিছু করার নেই | ভবিষ্যতে কম্পিউটার আরো ছোট, হালকা আর বহনযোগ্য হয়ে উঠবে |

এবার একটু দেখা যাক, কারা BCI নিয়ে আরো কি কি কাজ হচ্ছে |
Neural Signal নামের একটা speech system নিয়ে গবেষণা চলছে বোবা মানুষদের কথা বলার জন্য | এই পরীক্ষাতে electrode বসানো থাকে মস্তিষ্কের সেই অঞ্চলে যেটা কথা বলা পরিচালনা করে (Broca's Area) | আর BCI  কম্পিউটারের সাথে আরো যুক্ত থাকে sound speaker | অনেক training এর পর কোনো বোবা মানুষ এই system এর সাহায্যে ইংরেজি ভাষার ৩৯ টা phonemes (বিস্তারিত এখানে) ভাবতে পারে এবং BCI কম্পিউটার ও স্পিকারের সাহায্যে কথা বলতে পারে |
NASA ও এইধরনের একটা পরীক্ষামূলক সিস্টেম তৈরী করেছে | তারা অবশ্য সরাসরি মস্তিস্ক থেকে সিগনাল না নিয়ে গলা ও মুখের কম্পনের সিগনাল গ্রহণ করেছে BCI এর ইনপুট হিসাবে | এর সাহায্যে তারা google এ "NASA" শব্দটি "ভেবে ভেবে" লিখতে এবং search করতে সক্ষম হয়েছে |
Cyberkinetics Neurotechnology Systems নামের এক কোম্পানি BrainGate নামের একটা neural interface system বাজারেও ছেড়েছে | এই সিস্টেমের সাহায্যে শারীরিক প্রতিবন্ধীরা wheelchair চালাতে, কৃত্রিম প্রত্যঙ্গ চালনা করতে বা cursor সরাতে সক্ষম হবে |

BrainGate সিস্টেমের demo |
জাপানি গবেষকরা যে সিস্টেমটা বের করেছেন সেটা তারা সহজে বুঝে যাবেন যারা GAMER  বা AVATAR সিনেমাটা দেখেছেন | পার্থক্য এটাই জাপানি গবেষকরা এটা প্রয়োগ করেছেন online এ | online এ তারা একটা virtual জগত বানিয়েছেন | যারা user , তারা ভেবে ভেবে ওই জগতে নিজেদের profile avatar টা কে চালনা করতে পারবেন | তারা এই online জগতের নাম দিয়েছেন Second World !!

প্যারিসের একটি কনফারেন্সে Dr. Peter Brunner একটি demo দিচ্ছেন BCI সিস্টেমের |

speech BCI system এর logical diagram |

প্রশ্ন জাগতেই পারে : মস্তিষ্কের ভেতরে বসানো chip এ বাইরে থেকে ইলেকট্রিক সিগনাল পাঠিয়ে কেউ যদি কারো ভাবনা চিন্তা পরিচালিত করতে শুরু করে? কোনো অন্ধ মানুষের BCI system কে bypass করে কেউ যদি তার ইচ্ছা মতো ভিসুয়াল সিগনাল পাঠায়ে, তাহলে ওই অন্ধ মানুষটাকে নিজের ইচ্ছা মতো যা খুশি দেখানো সম্ভব হতেই পারে ?!!
উত্তর হলো, এটা এখন পর্যন্ত সম্ভব না | তবে ভবিষ্যতে যে "cerebral hacker" (নামটা আমারই দেয়া) গোষ্ঠী যে বেরোবেনা, সেটা হলফ করে বলা যাচ্ছেনা !! সেটা সত্যি হলে গোপনীয়তা বলে আর কিছু থাকবেনা | কাউকে "সম্মোহন" করা বা কারো গোপন চিন্তা জেনে ফেলার মতো ভয়ংকর সব ঘটনা ঘটতে শুরু করবে | দেখা যাক, ভবিষ্যত কি বলে | অপেক্ষা ছাড়া তো গতি নেই |

কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে সমগ্র ইন্টারনেটের মালিক কে? মনে প্রশ্ন জাগুক বা না জাগুক, আজ প্রশ্নের উত্তর নিয়েই সব আয়োজন।

ইন্টারনেট (Internet)

ইন্টারনেট হলো বিভিন্ন নেটওয়ার্কের একটা সমন্বিত সংযোগ। আগেই বলেছি এই সংযোগগুলো পরিচালিত হয় কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম নীতির মাধ্যমে যাকে বলা হয় Protocols. এই নিয়মগুলোই সমস্ত নেটওয়ার্কের মধ্যে সহজভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। তবে এ সবকিছুই নির্ভর করে বিশাল রাউটার পরিকাঠামো, নেটয়ার্ক এক্সেস পয়েন্ট (Network Access Points (NAP) এবং কম্পিউটার সিস্টেমের উপর।

তারপর নেটওয়ার্ক সিগনাল প্রেরণ করার জন্য প্রয়োজন কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট), হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত কেবল এবং সহস্র ওয়্যারলেস রাউটার। এতো কিছুর সমন্বয়ে যে বৈশ্বিক সিস্টেম গঠিত হয়েছে তা কোন কিছুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারেনি, অতিক্রম করে চলেছে দেশের পর দেশ, সাগর মহাসাগর এবং পাহাড় পর্বত। কোন দেশের সীমানা আটকে রাখতে পারেনি এই চলমান প্রযুক্তির আশির্বাদকে। দিনের পর দিনে এটি সংযুক্ত করছে শত নেটওয়ার্ককে। এ যেন মোবাইলে সাপের গেমটার মতো, খাবার খাচ্ছে আর বড় হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটি দেশে এখন ইন্টারনেট সংযোগ আছে।বর্তমান বিশ্বের সবাই এখন একটি নিদিষ্ট নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হলো এই বিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রন করছে কে? এটার উত্তর জানাতেই টিউনের বাকি অংশে আপনাদের স্বাগতম।

সমগ্র ইন্টারনেটের মালিক কে?

অনেকগুলো ছোট ছোট সিস্টেম মিলে যে দৈত্যাকার ইন্টারনেট তৈরী হলো, তাকে আমরা একটা বিশেষ সত্ত্বা বলতেই পারি। এখন এই একটা সত্ত্বার সত্ত্ব কার হবে? এটা কি একজন নিয়ন্ত্রন করে নাকি অনেকেই বা বিশেষ কোন গোষ্ঠী? আপনার মন কি বলে? এটাকি সত্যিই কোন বিশেষ একজনের দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব? যাহোক, হয়তো অনেকেই প্রশ্ন দেখে দ্বিধান্বিত হয়ে গেছেন, চলুন দুইটা অপশন দেই। দেখি আপনার ধারনার সাথে মিলে কিনা।

সমগ্র ইন্টারনেটের মালিক-
  • ক. কেউ না
  • খ. অনেক মানুষ
যদি আপনি মনে করেন ইন্টারনেট হলো একটি সম্মিলিত কিন্তু একক সত্ত্বা এবং কারও এটার উপর মালিকানা নেই। তাহলে নিশ্চয় এর জন্য কোন নির্দিষ্ট সংগঠন থাকবে যা এর গঠন এবং কাজ নিয়ন্ত্রন করে কিন্তু এই সমগ্র ব্যবস্থার উপর তাদের কোন মালিকানা নেই। কোন দেশের সরকার এর উপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনা। অথবা ভাবতে পারেন হাজার হাজার মানুষ এটার মালিক। ইন্টারনেটকে যদি অনেকগুলো পার্টের সমষ্টি হিসাবে কল্পনা করেন তাহলে অনেক মানুষ একেকটি পার্টের মালিক যারা এর উন্নয়নে কাজ করছে। আপনার ভাবনাগুলো যাইহোক, আপনি ধারেকাছে গেলেও আসল ঘটনার সাথে সামান্য পার্থক্য আছে। চলুন জেনে নেই কি সেই পার্থক্য।

ইন্টারনেটের সত্যিকারের মালিক

যে ফিজিক্যাল নেটওয়ার্ক বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে ইন্টারনেট ট্রাফিক পরিবহন করে তাকে বলা হয় ইন্টারনেটের মেরুদণ্ড (Internet Backbone). আগেকার দিনের ইন্টারনেট সিস্টেমে ARPANET ইন্টারনেটের মেরুদন্ড বা Backbone হিসাবে কাজ করেছে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি যারা রাউটার এবং ক্যাবলের যোগানের মাধ্যমে ইন্টারনেট মেরুদন্ড হিসাবে কাজ করছে। এই কোম্পানি গুলোকেই বলা হয় ইন্টারনেট সেবা দাতা বা আইএসপি (Internet Service Provider)। এখন কোন দেশ বা যদি কেউ নিজের প্রয়োজনে ইন্টারনেট এক্সেস পেতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই এই আইএসপির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। বিশ্বের সে সকল আইএসপি বা ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিখ্যাত তারা হলেন- UUNET, Level 3, Verizon, AT&T, Qwest, Sprint, Sprint, IBM ইত্যাদি।

বড় বড় আইএসপি গুলো থেকে আবার ছোট ছোট আইএসপি সৃষ্টি হয়েছে। যারা আমাদেরকে সেবা দিয়ে থাকে। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, যে সিস্টেম আমাদের কম্পিউটার টু কম্পিউটার ডাটা এক্সচেঞ্জ করে থাকে তাকে বলা হয় Internet Exchange Points (IXP)। বিভিন্ন কোম্পানি এবং অলাভজনক কিছু প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ন্ত্রন করে থাকে। এখন কথা হলো প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা আইএসপির আলাদা ইন্টারনেট থাকে। এখন আপনি একক ভাবে যদি কোন কম্পিউটার দিয়ে সেই ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হতে হোন তাহলে সেই ইন্টারনেটের মালিক আপনিও। মানে হলো, আপনি নিজেও ইন্টারনেটের একটা অংশের মালিক। কারন সমগ্র ইন্টারনেটের কোন মালিকানা হয় না। যদিও অনেক প্রতিষ্ঠান বা দেশের সরকার নিজেদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে যাকে বলা হয় লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN (Local Area Network)। যাহোক, মুদ্দা কথা হলো আপনি এবং আমি আমরা সকলেই একেক জন একেকটা ইন্টারনেট খণ্ডের মালিক। নিজেকে তো মালিক বলে দাবী করে ফেলেছেন, এখন কি মনে প্রশ্ন আসছে না যে এই জিনিসের দায়িত্ব আপনি কতোটা নিয়েছেন? আপনি যদি এর দায়িত্ব না নিয়ে থাকেন তাহলে এই সব কিছুর জন্য কে দায়িত্ব নিবে?

সবকিছুর জন্য তাহলে দায়ী কে?

মানুষের স্বভাব হলো উপরে উপরে অনেক কথা বললেও কাজের বেলায় দায়িত্ব নিতে পারে না। যেভাবে আপনাকে ইন্টারনেটের মালিক বানিয়ে খুশি করে দিলাম সেভাবে যদি আপনার উপর ইন্টারনেটের দায়িত্ব দিয়ে দিই তাহলে আপনার দায়িত্ব নেওয়া তো দুরের কথা আমার দফা রফা করে দিবেন। যাহোক, আমি আগেই বলেছিলাম যে ইন্টারনেট ব্যবস্থাটা চলে কিছু নিয়মের উপর যাকে আমরা প্রটোকলস (Protocols) বলি। সেই প্রটোকলগুলো মেনেই একটি কম্পিউটার ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের সাহায্যে অন্য কম্পিউটার তথ্য প্রদান করে। প্রটোকল না মেনে কোন কম্পিউটার তথ্য প্রদান করতে পারেনা। এখন যদি কোন প্রটোকল না থাকে তাহলে আপনাকে আগে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে আপনি অন্য কম্পিউটারে যে তথ্য প্রদান করছেন তার জন্য আপনাদের বোঝাপড়া আছে। এবং আপনার পাঠানো তথ্য সঠিক গন্তব্যেই পৌছাতে পারবে।

এখন কথা হলো ইন্টারনেটের যে হারে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে বিংশ শতাব্দীর প্রটোকলের সাথে একবিংশ শতাব্দীর প্রটোকল বা আগের বছরের সাথে পরের বছরের প্রটোকল একই রকম থাকবে এটা ভাবা বোকামী। ইন্টারনেটের উন্নতির সাথে এই প্রটোকল গুলোরও উন্নতি প্রয়োজন। তার মানে দাড়ালো, কাউকে না কাউকে এই নিয়মগুলো মানে প্রটোকল পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের আর প্রশ্ন করবো না, সমগ্র ইন্টারনেট কাঠামো এবং প্রটোকল ঠিক করে দেওয়ার জন্য রয়েছে অনেকগুলো সংগঠন যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। চলুন তাদের সম্পর্কে কিছু জেনে নিই।
  • The Internet Society: একটি অলাভজনক সংগঠন যারা ইন্টারনেট স্ট্যান্ডার্ড এবং পলিসি নির্ধারন এবং উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
  • The Internet Engineering Task Force (IETF): এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যাদের রয়েছে ওপেন মেম্বারশীপ পলিসি এবং এরা বিভিন্ন গ্রুপ ভিত্তিক কাজ করে থাকে। ইন্টারনেটের বিভিন্ন বিষয়কে এরা আলাদা আলাদা ভাগ করে প্রত্যেক ভাগের জন্য দক্ষ জনশক্তিকে কাজে লাগায় এ সংগঠনটি। বর্তমান ইন্টারনেটের এই স্থিতিশীলতা এই সংগঠনের অনবদ্য অবদান।
  • The Internet Architecture Board (IAB): এরা সাধারনত ইন্টারনেট প্রটোকল প্রণয়ন এবং স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারনে কাজ করে থাকে।
  • The Internet Corporation for Assigned Names and Numbers (ICANN): এই সংগঠনটি ব্যক্তিগত কিন্তু অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান যাদের কাজ হলো এটা নিশ্চিত করা যে প্রত্যেকটা ডোমেইন নেইম সিস্টেমের (Domain Name System (DNS) সাথে সঠিক আইপি এড্রেসটি লিংক করা আছে কি না।
এই সংগঠনগুলো ইন্টারনেটের জন্য সবকিছু করলেও এরা কখনো ইন্টারনেটের মালিকানা দাবি করতে পারেনা। আসল কথা হলো কেন্দ্রিয়ভাবে ইন্টারনেটের কোন মালিকানা নেই। অনেকেই এটার উন্নয়নে কাজ করলেও এখনো পর্যন্ত কেউ এটার মালিকানা দাবি করতে পারেনি।

যে আবিষ্কারগুলো কেড়ে নিয়েছিল আবিষ্কারকদের প্রাণ



__________________________________________________________________________________________________

হেনরি উইনস্টেনলি


১৬৪৪ সালের ৩১ মার্চ এসেক্সে জন্ম নেয়া হেনরি উইনস্টেনলি ছিলেন বিখ্যাত ইংরেজ ইঞ্জিনিয়ার। যিনি প্রথম এডিস্টোন বাতিঘর নির্মাণ করেন। নিজের তৈরি এই বাতিঘর নিয়ে ভদ্রলোক খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এবং প্রচণ্ড ঝড়েও এই বাতিঘর ধ্বংস হবে না বলে অহঙ্কার করতেন। ১৭০৩ সালের ২৭ নভেম্বর, দিনটি ছিল মেঘলা। বড়সড় একটি ঝড় সাগর থেকে ধেয়ে আসছে দেখে হেনরি সবাইকে বললেন, তিনি তার নির্মিত বাতিঘরে সে রাত থাকবেন এবং প্রমাণ করে দেবেন, এই ঝড় তার বাতিঘরের কোনো ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। সে রাতে হেনরি তার ৫ সহকারীকে নিয়ে বাতিঘরে থাকার সময় প্রচণ্ড ঝড়ে বাতিঘরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এবং সবাই মৃত্যুবরণ করে।

আলেকজান্ডার বগডেনভ


১৮৭৩ সালের ২২ আগস্ট পোল্যান্ডে জন্ম নেন বিখ্যাত রাশিয়ান চিকিত্সক, দার্শনিক ও কল্পবিজ্ঞান লেখক আলেকজান্ডার বগডেনভ। ১৯২৪ সালের দিকে তিনি বিশ্বাস করতে লাগলেন অল্পবয়স্ক কারও দেহ থেকে রক্ত গ্রহণের মাধ্যমে রক্ত গ্রহীতা দীর্ঘায়ু লাভ করতে পারেন। তিনি এ বিষয়ে পরীক্ষা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তার এই পরীক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অনেক বিখ্যাত লোকও অংশ নেন। এমনকি লেনিনের বোনও। এই করতে গিয়ে ঘটনাচক্রে তিনি একসময় যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী এক ছাত্রের রক্ত তার শরীরে প্রবেশ করান। এরপর জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে তিনি খুব দ্রুত মৃত্যুবরণ করেন। যদিও তার বেশ কয়েকজন সহকারী মন্তব্য করেছিলেন, ওই পরীক্ষায় তিনি অনেকটা সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

ক্যারেল সোজেক


১৯৪৭ সালে চেকোশ্লোভিয়াতে জন্ম নেয়া সোজেক ছিলেন একজন স্টান্টম্যান। তিনি উপর থেকে গড়িয়ে পড়ার জন্য এক ধরনের ক্যাপসুল তৈরি করেন। এই ক্যাপসুলে করে নায়াগ্রা জলপ্রপাত থেকে গড়িয়ে পড়ে সবাইকে চমকে দেন তিনি। কারণ হালকা ছেঁড়া-কাটা ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি তার।

এর কিছুদিন পর ১৯ জানুয়ারি ১৯৮৫-তে তিনি টেক্সাসের হিউস্টোন অ্যাস্ট্রোডোমে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। ১৮০ ফুট উপর থেকে নিচে রাখা জলপাত্রে গড়িয়ে পড়ার সময় তার তৈরি ক্যাপসুলে সমস্যা দেখা দেয়। ক্যাপসুলের স্পিল্গন্টারের আঘাতে ভয়াবহভাবে ক্ষতবিক্ষত হন সোজেক এবং মারা যান এর পরদিন।

ফ্রানত্জ রিচাল্ট

ফ্রান্সে বসবাসকারী ফ্রানত্জ একজন অস্ট্রীয় দর্জি ছিলেন। ভদ্রলোক একটি ওভারকোটের নকশা করেছিলেন যা একই সঙ্গে প্যারাসুটের কাজ করবে। প্রাথমিক অবস্থায় ডামি ব্যবহার করে বহুতল ভবনের উপর থেকে পরীক্ষা চালিয়ে তিনি সফল হন। এরপর তার এই অদ্ভুত পোশাক আরও পরিমার্জিত করে তিনি নিজে আইফেল টাওয়ার থেকে লাফিয়ে তার তৈরি ওভারকোট কাম প্যারাসুটের পরীক্ষা করতে চেষ্টা চালান। বন্ধুদের বারণ ও পুলিশি বাধা পেরিয়ে অবশেষে ১৯১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আইফেল টাওয়ার থেকে ওভারকোটটি পরে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

কিন্তু ওভারকোটটি প্যারাসুটের মতো কাজ করেনি এবং নিচে বরফে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিনই মারা যান ভদ্রলোক।

অটো লিলিনথাল


লিলিনথালকে এভিয়েশনের অগ্রদূত বলা হয়। গ্লাইডারের (ইঞ্জিনবিহীন বিমান) আধুনিকায়ন ও উড্ডয়নে তিনি এত পারদর্শী ছিলেন যে লোকে তাকে গ্লাইডার কিং বলেই বেশি ডাকত।

৯ আগস্ট ১৮৯৬ সালে নিজের তৈরি একটি গ্লাইডারে করে ওড়ার সময় ভারসাম্য হারিয়ে ১৭ মিটার উপর থেকে নিচে পড়ে যান তিনি। মেরুদণ্ড ভেঙে মারা যান ওইদিনই।

উইলিয়াম বুলক


১৮১৩ সালে আমেরিকায় জন্ম নেয়া বুলক রোটারি প্রিন্টিং প্রেস তৈরি করেন ১৮৬৩ সালে। যন্ত্রটি মুদ্রণশিল্পে বিপ্লব এনে দেয় এর কার্যকারিতা এবং দ্রুতগতিতে মুদ্রণ সুবিধার জন্য। ১৮৬৭ সালে ভদ্রলোক তার নিজের আবিষ্কৃত একটি মেশিন মেরামত করার চেষ্টা করেন। এসময় পা দিয়ে একটি পুলিকে লাথি দিয়ে বসানোর চেষ্টা করার সময় তার পা মারাত্মকভাবে কেটে যায়। কয়েকদিনের ভেতর স্থানটিতে পচন ধরলে অপারেশন করানোর সময় তার মৃত্যু ঘটে।

জে. জি. প্যারি টমাস


ওয়েলসের বাসিন্দা টমাস একজন ইঞ্জিনিয়ার ও মোটর-রেসিং ড্রাইভার ছিলেন। ১৯২৬ সালে তিনি ১৭০ মাইল ঘণ্টায় গাড়ি চালিয়ে রেকর্ড গড়েন। কিন্তু বছর খানেক পরই তার প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যালকম ক্যাম্পবেল তার রেকর্ড ভেঙে দেন। টমাস এবার তার গাড়িকে নতুন করে সাজান। তিনি চেইন ও গিয়ার সিস্টেমে ব্যাপক পরিবর্তন এনে তার রেসিং কারকে আরও দ্রুতগতির করে তোলেন। ১৯২৭ সালের ৩ মার্চ রেকর্ড ভেঙে দেয়ার জন্য রেসে নামেন তিনি। কিন্তু তার নিজের ডিজাইনে করা চেইন ভেঙে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। মাথায় শক্ত আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

টমাস মিজলি


বিখ্যাত আমেরিকান কেমিস্ট মিজলি লেডেড পেট্রল এবং সিএফসি আবিষ্কার করেন। দীর্ঘসময় রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং লেড পয়জনে আক্রান্ত হয়ে এক সময় তার মধ্যে পোলিও’র লক্ষণ দেখা দেয়। কিছুদিনের মধ্যেই তার শরীর অবশ হয়ে পড়ে।

এই অবস্থাতেও তার আবিষ্কারের নেশা কাটেনি। নিজে অন্যের সাহায্য ছাড়াই চলাফেরা করার জন্য নিজ বিছানায় এক ধরনের কপিকল তৈরি করেন। কিন্তু কপিকলটির রশি তার গলায় ফাঁস লাগলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান ভদ্রলোক।

মেরি কুরি


বিখ্যাত কেমিস্ট মেরি কুরি দুবার নোবেল জেতেন তার আবিষ্কারের জন্য। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তার মৃত্যুর পেছনেও জড়িয়ে আছে তার আবিষ্কার। কুরি রেডিয়াম ও পোলনিয়াম আবিষ্কার করেন। তেজস্ক্রিয়তা তত্ত্ব ও তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ পৃথকীকরণ কৌশল তার গবেষণার ফসল। দিনরাত ল্যাবরেটরিতে তেজস্ক্রিয় দ্রব্য নিয়ে অসতর্ক অবস্থায় গবেষণা করতেন বলে তেজস্ক্রিয়তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগতে শুরু করেন তিনি। রক্তস্বল্পতাসহ নানা সমস্যায় ভুগে অবশেষে ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই মারা যান কুরি।

কুপার পিপস কোল


১৮১৯ সালে ব্রিটেনে জন্ম নেয়া কোল ছিলেন রাজকীয় নৌবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। তখনকার সময় যুদ্ধজাহাজগুলোতে কামান রাখার মঞ্চগুলো ঘূর্ণায়মান ছিল না। যার ফলে যুদ্ধের সময় কামান ব্যবহার সুবিধাজনক ছিল না। ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় কোল প্রথম ঘূর্ণায়মান টারিট আবিষ্কার করেন এবং পরে নিজ নামে পেটেম্লট নেন।
যুদ্ধের পর কোল তার নিজ জাহাজে এটি স্থাপন করেন এবং অযথা আরও বেশকিছু ভারি সরঞ্জাম দিয়ে জাহাজ সাজান। কোল যে নকশা এঁকেছিলেন, তৈরির সময় তার লোকেরা তা ঠিকমত অনুসরণ না করায় জাহাজ যথেষ্ট ভারি হয়ে যায়। ১৮৭০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার সময় ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে ভারি এই জাহাজ উল্টে ক্যাপ্টেন তার ৫০০ নাবিকসহ মারা যান।